দেশে দেশে ঈদ উদযাপনের বৈচিত্র্য
Home ⟾ Intellectual  ⟾  দেশে দেশে ঈদ উদযাপনের বৈচিত্র্য

ঈদ মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনন্য উৎসব, যা বিশ্বব্যাপী নানা সংস্কৃতির সংমিশ্রণে উদযাপিত হয়। যদিও ঈদের মূল উদ্দেশ্য ও আত্মিক আনন্দ সর্বত্র এক, তবে দেশভেদে উদযাপনের ধরন ভিন্ন হয়ে থাকে।

তুরস্কে ঈদকে বলা হয় ‘শেকের বেয়ারাম’, যার অর্থ ‘মিষ্টির উৎসব’। এই দিনে ছোটদের মাঝে মিষ্টান্ন বিতরণ করা হয় এবং তারা বড়দের কাছ থেকে উপহার ও টাকা পায়। এছাড়া তুর্কিদের মাঝে ঈদের দিন কবরস্থান পরিদর্শন করার একটি বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে। অপরদিকে ইন্দোনেশিয়ায় ঈদ মানেই লাখ লাখ মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরা। এটিকে ‘মুদিক’ বলা হয়। ঈদের দিন তারা বিশেষ খাবার যেমন ‘কেতুপত’ (নারকেল দুধে রান্না করা চালের কেক) ও মাংসের নানা পদ খেয়ে উদযাপন করে। এছাড়া ছোটরা বড়দের কাছে দোয়া নিতে আসে। আফ্রিকার দেশ মরক্কোর মানুষ ঈদের দিন ঐতিহ্যবাহী পোশাক জেলাবা ও কফতান পরেন। সকালে নামাজের পর তারা খেজুর ও দুধ খেয়ে দিন শুরু করে। খাবারের মধ্যে ‘মাসেমেন’ (এক ধরনের প্যানকেক) ও মিষ্টি জাতীয় খাবার খুবই জনপ্রিয়। পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদের সময় কাটানো এখানকার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নীলনদের তীরের মিশরে ঈদ মানেই বিশেষ ধরনের বিস্কুট ‘কাহক’ খাওয়ার রীতি। ঈদের আগের রাতেই বাড়ির মহিলারা একসাথে এই মিষ্টি বিস্কুট তৈরি করেন। এছাড়া মিশরে ঈদের অন্যতম আকর্ষণ হলো নদীর ধারে পিকনিক এবং নৌকাভ্রমণ।

পাকিস্তানে ছোটরা ঈদের দিন বড়দের কাছ থেকে ‘ঈদি’ নামে উপহার বা টাকা পায়। এখানকার ঈদ উদযাপনেও খাবার একটি বড় অংশ—সেমাই, বিরিয়ানি, শাহী টুকরা ইত্যাদি পদ খুবই জনপ্রিয়।

বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশেই ঈদের নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে, যা ঈদকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। ঈদের মূল আবেদন একই থাকলেও, এই ভিন্নতাগুলোই প্রতিটি জাতির সংস্কৃতিকে বিশেষ করে তোলে। আপনি কোন দেশের ঈদ উদযাপনের রীতিটি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন? মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না!

আবু শাহেদ চৌধুরী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *